চারে চার ওবায়দুল কাদের

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গঠিত চার মন্ত্রিসভাযতেই জায়গা করে নিয়ে ওবায়দুল কাদের হয়ে গেলেন সবার চেয়ে আলাদা। নিজেকে রেখেছেন সব মন্ত্রিসভাতেই অমলিন।

১৯৯৬, ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮- এই চারবার শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মন্ত্রিসভা গঠন করে আওয়ামী লীগ। এই চার মন্ত্রিসভায় অনেকেই মন্ত্রী, উপমন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন। অনেকে ছিলেন একাধিক মন্ত্রিসভাতেও। এর আগের তিন মন্ত্রিসভায় ছিলেন এমনও আছেন কেউ কেউ। কিন্তু একজন আছেন, যিনি সবার চেয়ে আলাদা। যিনি চার মন্ত্রিসভাতেই জায়গা পেয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

সর্বশেষ রোববার (৬ জানুয়ারি) ঘোষিত একাদশ সংসদের মন্ত্রিসভায় তিনি সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন।

ওবায়দুল কাদের ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গঠিত প্রথম মন্ত্রিসভায় ছিলেন যুব, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী। এরপর ২০০৮ সালের শেখ হাসিনার দ্বিতীয় মেয়াদের সরকারে শুরুর দিকে মন্ত্রিসভায় জায়গা না হলেও মেয়াদের মাঝামাঝি এসে মন্ত্রিসভায় ফেরেন কাদের। ওই মন্ত্রিসভায় তৎকালীন যোগাযোগমন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি।

এরপর ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে শেখ হাসিনা যখন তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করেন, সেই মন্ত্রিসভায়ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান ওবায়দুল কাদের।

২০১৫ সালের দিকে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়কে ভেঙে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেল মন্ত্রণালয় নামে দুটি আলাদা মন্ত্রণালয় করা হলে তিনি সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান।

সর্বশেষ ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী আওয়ামী লীগ যে সরকার গঠন করতে যাচ্ছে, তাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গঠিন মন্ত্রিসভায় চতুর্থবারের মতো জায়গা পেয়েছেন ওবায়দুল কাদের।

উল্লেখ্য, ১৯৫০ সালের ১ জানুয়ারি, নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ থানার বড় রাজাপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন ওবায়দুল কাদের। বাবা মোশারফ হোসেন সরকারি চাকুরি ছেড়ে দিয়ে জনশিক্ষা স্বার্থে উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক। ওবায়দুল কাদের বসুরহাট সরকারি এএইচসি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে প্রথম বিভাগে এসএসসি ও নোয়াখালী সরকারি কলেজ থেকে মেধা তালিকায় স্থান নিয়ে এইচএসসি পাশ করেন। এরপর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্সসহ স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।

তিনি কলেজ জীবন থেকে ছাত্র রাজনীতি শুরু করেন। ১৯৬৬ সালে ৬ দফা আন্দোলন এবং ১৯৬৯ সালে গণআন্দোলন ও ছাত্রদের ১১ দফা আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। তিনি ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন এবং কোম্পানীগঞ্জ থানা মুজিব বাহিনীর (বিএলএফ) অধিনায়ক ছিলেন। রাজনৈতিক জীবনের বিভিন্ন সময়ে একাধিকবার কারা বরণ করেন।

১৯৭৫ এর পর দীর্ঘ আড়াই বছর কারাগারে ছিলেন। কারাগারে থাকা অবস্থায় তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন এবং পরপর দুইবার ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন।